গত মাসে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের আসরে ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে এক বছরের জন্য এই সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করে। জলবায়ু পরিবর্তন, আর্থিক মন্দা ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই ও সেই ক্ষেত্রে বৈশ্বিক প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে নজর দেওয়াই হবে ভারতের লক্ষ্য। সেই উদ্দেশ্যে আগামী এক বছরে ভারত মোট ১০০টি সম্মেলন করবে। প্রথম সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে মরুশহর রাজস্থানের উদয়পুরে।
বৃহস্পতিবার থেকে ভারতের সব ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’সহ ১০০টি ঐতিহাসিক সৌধ এক সপ্তাহের জন্য আলোয় সেজে উঠবে। সেখানে প্রতিভাত হবে জি-২০–এর সাদা, গেরুয়া, নীল ও সবুজ রঙের লোগোয় পদ্মফুলের ওপরে রাখা পৃথিবী। নিচে দেবনাগরি হরফে লেখা সংস্কৃত বাগ্ধারা ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’, যার অর্থ, গোটা পৃথিবী প্রকৃতপক্ষে এক পরিবার, ইংরেজিতে যা ‘ওয়ান আর্থ, ওয়ান ফ্যামিলি, ওয়ান ফিউচার’।
এ লক্ষ্যেরই ব্যাখ্যা করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁর নিবন্ধে। তিনি লিখেছেন, ‘গ্রহের নিরাময়ের জন্য ভারতের ঐতিহ্যের ওপর ভিত্তি করে স্থিতিশীল ও পরিবেশবান্ধব জীবনযাত্রায় আমরা উৎসাহ জোগাব। মানব পরিবারে সমন্বয় প্রচারের জন্য আমরা খাদ্য, সার ও ওষুধের বৈশ্বিক সরবরাহ রাজনীতিমুক্ত করব যাতে ভূরাজনৈতিক উদ্বেগ মানবিক সংকটে পরিণত না হয়। যাদের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি, তারাই আমাদের চিন্তাভাবনায় অগ্রাধিকার পাবে। ঠিক যেমন একটা পরিবারে হয়ে থাকে।’ মোদি লেখেন, ‘সংগঠনের অগ্রাধিকারগুলো শুধু শরিকদের সঙ্গেই আলোচনা করে গঠিত হবে না, দক্ষিণ গোলার্ধের সহযাত্রীদের সঙ্গেও আলোচনা করা হবে, যাদের কণ্ঠস্বর প্রায়ই অশ্রুত থাকে’।
জি-২০ সংগঠনের ‘শেরপা’ অমিতাভ কান্ত জানান, এত দিন পৃথিবীর এজেন্ডা তৈরি করত উন্নত দেশগুলো। এই প্রথমবার উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে ভারত সেই কর্মসূচি ঠিক করবে। ভারত প্রতিটি ক্ষেত্রে মতৈক্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করবে। কাজটা মোটেও সহজ নয়। খুবই কঠিন চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েই সভাপতি হিসেবে ভারত পথচলা শুরু করছে।
ভারত ছাড়া জি-২০–এর সদস্য দেশগুলো হলো অস্ট্রেলিয়া, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মেক্সিকো, রাশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বিশ্বের মোট জাতীয় উৎপাদনের ৮৫ শতাংশ এই দেশগুলোর অবদান।