Breaking News

বাংলাদেশের বিজয়ের সেই দিনগুলি

সুখরঞ্জন দাশগুপ্ত

৫১ বছর আগে গোটা বিশ্বে দিনের আলো ফোটার আগেই বাঙালিরা যেখানেই ছিলেন, টিভি বা রেডিও খুলে বসে পড়েছিলেন সুসংবাদটি শোনার জন্য। বেলা যত বাড়তে থাকে, বাঙালির মনে একটি প্রশ্ন- কখন পৃথিবীর মানচিত্রে উঠে আসবে নতুন দেশটি, যার নাম হবে বাংলাদেশ। ভারতীয় সময় বিকাল সাড়ে ৪টায় ৯৩ হাজার সেনা নিয়ে দুর্দান্ত প্রতাপশালী ইয়াহিয়া-ভুট্টোর বাহিনী আত্মসমর্পণ করল। তার ১৫-২০ মিনিট পরেই পৃথিবীর মানচিত্রে উঠে এলো একটি নতুন দেশ, বাংলাদেশ। আমরা কলকাতায় বসে দেখেছি ৯ মাস ধরে দেশ স্বাধীন করার জন্য হাজার হাজার মুক্তিবাহিনী ভারতের সীমান্ত রক্ষাবাহিনী বিএসএফের কাছে ট্রেনিং নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। ৯ মাসের দীর্ঘ যুদ্ধ, ভারতের সংসদে বিরোধী দলের নেতারা এক সুরে দাবি করতে থাকেন-ওপার বাংলার বাঙালিদের বাঁচাতে হবে। তখনকার প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে প্রতিদিন বলতেন, আপনারা যে দাবি তুলছেন সে ব্যাপারে আমি সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল। সময়মতো সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমিও আপনাদের মতো চিন্তিত, উদ্বিগ্ন।

সেই ৯ মাসের ঘটনার তো কোনো বিরাম নেই। ৭ মার্চের বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ কার্যত এটিই ছিল তাঁর স্বাধীনতার ঘোষণা। সম্প্রতি তাঁর সুযোগ্য কন্যা, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তিনি একটি বই লিখেছেন, বইটির নাম, “মুজিব বাংলার, বাংলা মুজিবের”। সেখানে তিনি লিখেছেন ‘ঐতিহাসিক ভাষণ যখন তিনি দেন, তখন তাঁর হাতে কোনো কাগজ ছিল না। ছিল না কোনো নোট। চোখের চশমাটা খুলে টেবিলে রেখে তিনি ভাষণটা দিলেন ঠিক সে কথা যা তাঁর মনে এসেছিল। বাংলার মানুষের মনে প্রতিটি কথা গেঁথে গিয়েছিল। ‘স্বাধীনতা’ শব্দটা বুকে ধারণ করে তিনি যে নির্দেশনা দিয়েছিলেন তা দেশের মুক্তিকামী মানুষ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে বিজয় অর্জন করেছিল। শোষণ-বঞ্চনার হাত থেকে মুক্তি পেয়েছিল।

স্বাধীনতার ৫০ বছর পার হয়েছে। এ ভাষণের আবেদন আজো অটুট। পৃথিবীর অন্য কোনো ভাষণ এত দিন আবেদন ধরে রাখতে পারেনি। ৫০ বছরে এই ভাষণ কতবার এবং কত জায়গায় বাজানো হয়েছে! কত মানুষ শুনেছে, তা কি কখনো হিসাব করা গেছে? যায়নি। প্রতি বছর ৭ মার্চে ভাষণ বাজানো হচ্ছে ঢাকা শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত, মানুষ এ ভাষণে প্রেরণা পায়। ১৯৭৫ সালের পর ২১ বছর সময় লেগেছে এ ভাষণ জনগণের সামনে সরকারিভাবে প্রচার করার জন্য। ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে আসার পর সরকারি গণমাধ্যমে এ ভাষণ প্রচার শুরু হয়।

About Faruk Hossain Mojumder

Check Also

ইন্টারন্যাশনাল পিচ অ্যাওয়ার্ড পেলেন বাংলাদেশী কবি কাজী জহিরুল ইসলাম

দুলাল খান:সম্প্রতি নিউইয়র্কের জুইশ সেন্টারে বাঙালি কবি কাজী জহিরুল ইসলামকে ‘পিস রান টর্চ বিয়ারিং অ্যাওয়ার্ড’ …

হিরো আলমের চপেটাঘাত কাকলি ফার্নিচার ও জাসদের মশালঃ নঈম নিজাম

হিরো আলম কি প্রচলিত রাজনৈতিক ধারায় চপেটাঘাত করলেন? পরাজয়ের পর তিনি প্রশাসনের প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে …

‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২২’ প্রাপ্ততের পুরস্কার প্রদান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে অমর একুশে বইমেলা ২০২৩-এর উদ্বোধন করেছেন। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *