Breaking News

প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজার যাচ্ছেন কাল, বৃহৎ জনসভার প্রস্তুতি আওয়ামী লীগের

বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভাকে কেন্দ্র করে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সফল করতে নেতাকর্মীরা নানামুখী প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। জনসভায় প্রায় ৫ লাখ লোকের সমাগম হবে বলে জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যে কক্সবাজার আন্তর্জাতিক শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। শেষ হয়েছে মঞ্চ তৈরির কাজ। নেতাকর্মীদের নামে ব্যানার-ফেস্টুন ও তোরণে ছেয়ে গেছে পর্যটন শহর।

বিশ্বমানের পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে মহাপরিকল্পনা নিয়ে ১০টি মেগা প্রকল্পসহ ছোট-বড় ৭২টি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। ইতিমধ্যে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক, খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্প, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ, লিংকরোড থেকে হলিডে মোড় সড়ক এবং মহেশখালী ডিজিটাল আইল্যান্ডে সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে জনগণ। তারমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদিন ২৮ প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। ১ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। একই সঙ্গে ৫৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪টি প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন তিনি।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন প্রধানমন্ত্রীর আগমনে উদ্বোধন ও ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন যোগ্য তালিকা চূড়ান্ত করেছেন।

 

এদিকে, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার জনসভা উপলক্ষে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে চলছে উৎসবের আমেজ। সড়কের উভয় পার্শ্বে রঙ-বেরঙের ব্যানার-ফেস্টুন, গায়ে জড়ানো বিভিন্ন রঙের টি-শার্ট ও চারদিকে চলছে ঢাকঢোল। বর্ণিল সাজের মিছিলে উৎসবের জোয়ার শুরু হয়েছে। দীর্ঘ সাড়ে ৫ বছর পর পর্যটন রাজধানী কক্সবাজার জনসভায় ভাষণ দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এ সমাবেশকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।

কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, ৭ই ডিসেম্বর বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিশাল জনসভায় ভাষণ দেবেন। এবার প্রধানমন্ত্রীর জনসভাটি কক্সবাজারবাসী কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে নিয়েছে। এখানে ৫ লাখ লোকের সমাবেশ হবে। কেবল স্টেডিয়াম নয় পুরো কক্সবাজার শহর জনসমুদ্রে পরিণত হবে। এর জন্য সকল প্রস্তুতি শেষ হয়েছে।

জেলা শহর ছাড়াও উপজেলা ইউনিটগুলোও ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। উপজেলা ইউনিটগুলোর মধ্যে কারা বেশি লোক জড়ো করবে সে প্রতিযোগিতা চলছে।
উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় উখিয়া থেকে ২০ হাজার মানুষ নিয়ে উপস্থিত হবো।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তালিকায় উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত ২৮টি প্রকল্প হল, কক্সবাজার গণপূর্ত উদ্যান, বাহারছড়া বীর মুক্তিযোদ্ধা মাঠ, কুতুবদিয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ভবন, উপজেলা ভূমি অফিস ভবন, পেকুয়া, কক্সবাজার জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় ভবন, শেখ হাসিনা জোয়ারিয়ানালা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এর চার তলা একাডেমিক ভবন, আবদুল মাবুদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের চার তলা একাডেমিক ভবন, মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের চার তলা একাডেমিক ভবন, কক্সবাজার জেলার লিংক রোড-লাবনী মোড় সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ, রামু-ফতেখাঁরকুল-মরিচ্যা জাতীয় মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ, টেকনাফ-শাহপরীর দ্বীপ জেলা মহাসড়ক এর হাড়িয়াখালী হতে শাহপরীরদ্বীপ অংশ পুন:নির্মাণ, প্রশস্তকরণ এবং শক্তিশালীকরণ, বাঁকখালী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন, সেচ ও ড্রেজিং প্রকল্প (১ম পর্যায়), শাহপরীরদ্বীপে সী ডাইক অংশে বাঁধ পুন:নির্মাণ ও প্রতিরক্ষা কাজ, ক্ষতিগ্রস্ত পোল্ডার সমূহের পুর্নবাসন প্রকল্প, রামু কলঘর বাজার-রাজারকুল ইউপি সড়কে বাঁকখালী নদীর উপর ৩৯৯.০০ মিটার দীর্ঘ সাংসদ ও রাষ্ট্রদূত ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরী সেতু, কক্সবাজার জেলায় নবনির্মিত ৬টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস ভবন, ৪টি উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন (রামু, টেকনাফ, মহেশখালী ও উখিয়া), কক্সবাজার পৌরসভার এয়ারপোর্ট রোড আরসিসিকরণ ও অন্যান্য, শহীদ সরণি আরসিসিকরণ ও অন্যান্য, বীর শ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়াম সড়ক আরসিসিকরণ ও অন্যান্য, নাজিরারটেক শুটকি মহাল সড়ক আরসিসিকরণ ও অন্যান্য, টেকপাড়া সড়ক আরসিসিকরণ ও অন্যান্য, সী বীচ রোড আরসিসিকরণ ও অন্যান্য, মুক্তিযোদ্ধা সরণি আরসিসিকরণ ও অন্যান্য, সৈকত-স্বরণ আবাসিক এলাকা সড়ক আরসিসিকরণ ও অন্যান্য।

ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের জন্য থাকা ৪ প্রকল্প হচ্ছে, বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট (২য় পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্প, কুতুবদিয়া উপজেলাধীন ধুরুং জিসি মিরাখালী সড়কে ধুরুংঘাটে ১৫৩.২৫ মিটার জেটি এবং আকবর বলি ঘাটে ১৫৩.২৫ মিটার জেটি নির্মাণ, মহেশখালী উপজেলাধীন গোরকঘাটা ঘাটে জেটি নির্মাণ, বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্ত নিরাপত্তা উন্নত করার জন্য উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় নাফনদী বরাবর পোল্ডার সমূহের (৬৭/এ, ৬৭, ৬৭/বি এবং ৬৮) পুনর্বাসন প্রকল্প।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে ধারাবাহিকভাবে প্রস্তুতি শেষ করছে। সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকল প্রকার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ জানিয়েছেন, উদ্বোধন ও ভিত্তি প্রস্তরের তালিকায় আরও প্রকল্প যুক্ত হতে পারে। জেলা প্রশাসক আরও জানিয়েছেন, কক্সবাজারকে একটি উন্নত ও পরিপূর্ণ পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ নজর রয়েছে।

About Faridul Alam Farid

Check Also

হজযাত্রা : বৃহস্পতিবারের পর আর নিবন্ধন নয়

এবার বাংলাদেশ থেকে হজ পালনে বুধবার সকাল পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারিভাবে ৯২ হাজার ১৪৮ জন …

সায়েন্সল্যাবে বিস্ফোরণে আহত ১৩ জন ঢামেকে ভর্তি

স্টাফ রিপোর্টার: রাজধানীর সায়েন্সল্যাব এলাকার শিরিন ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ১৩ জন আহত হয়েছেন। তাদেরকে ঢাকা …

বাংলাদেশ কোন ক্ষেত্রেই পিছিয়ে থাকবে না : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ কোন ক্ষেত্রেই …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *